১০ আগস্ট ২০১৯ শনিবার, ০১:৪৬ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
আমাদের পুঁজিবাজারের গভীরতা অনেক কম। এত পুরোনো একটি পুঁজিবাজারের এ অবস্থা কেন? আবার চিটাগং স্টক একচেঞ্জের বয়স প্রায় ২৫ বছর হয়ে গেছে। শোনা যাচ্ছে নতুন আরেকটি স্টক এক্সচেঞ্জ হবে। সেটা সমস্যা নয়। মূল সমস্যা বাজারে ভালো মানের কোম্পানির অভাব। কোম্পানিগুলো বাজারে আসার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ডিএসই এবং বিএসইসি যে নিয়মনীতি করে রেখেছে তা নমনীয় নয়। বিশেষ করে একটি ভালো কোম্পানি বাজারে আসতে তিন থেকে চার বছর লেগে যাচ্ছে। কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে আসার ক্ষেত্রে নমনীয় না হলে বাজার ভালো করা সম্ভব হবে না। এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টারের বিজনেস এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, আইসিএবির কাউন্সিল মেম্বার সাব্বির আহমেদ, এফসিএ এবং দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সিনিয়র নিউজ কনসালট্যান্ট রায়হান এম চৌধুরী।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গত দেড় বছর ধরে পুঁজিবাজারে এমন অবস্থা বিরাজ করছে যার কারণে সব ধরনের বিনিয়োগকারী ক্ষতির সম্মুখীন। মানি মার্কেটে তারল্য সংকটসহ আরও অনেক বিষয়ের কারণে বাজারে এ অবস্থা বিরাজ করছে। বিশেষ করে বিনিয়োগকারীর আস্থার অভাব। ২০১০ সালে বাজারের ধসের পর এখনও বাজারে আস্থা ফিরে আসেনি। এর মূল কারণ, গত আট থেকে ৯ বছরে বাজারে যেসব কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাদের বেশিরভাগই স্বল্পমূলধনি। ভালো মানের কোম্পানি না আসায় নতুন বিনিয়োগকারীও আসছে না। আবার ব্যাংকে আমানতের সুদহার ছয় শতাংশ ও ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাংক খাত সামনের দিনগুলোতে আরও তারল্য সংকট তৈরি করবে। কারণ ছয় শতাংশ ডিপোজিট রেট মানে হচ্ছে, এখানে মুদ্রাস্ফীতির হার এবং ডিপোজিটের সুদের ওপর কর দেওয়ার পর বছর শেষে মূলধন নেগেটিভ হয়ে যাবে। যার কারণে কোনো ডিপোজিটর ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহী হবে না। ব্যাংক খাতে এমন অবস্থা কেন তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের অনুসন্ধান করে দেখা উচিত। হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বাজারে কী প্রভাব পড়তে পারে, সেটা ভেবে দেখা উচিত ছিল।
সাব্বির আহমেদ বলেন, এখন পুঁজিাবাজার মোটেই ভালো অবস্থানে নেই। এর মূল কারণ বিনিযোগকারীদের আস্থার অভাব। আবার নতুন করে বাজারে যেসব কোম্পানি আসছে দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগই আশানুরূপ পারফরম্যান্স দেখাতে পারছে না। সম্প্রতি একটি কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এটি নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। ট্রেডিংয়ের প্রথমদিকে যে প্রাইসে এসেছিল, দুই থেকে তিন দিন পরে শেয়ারটির দর ফেসভ্যালুর নিচে নেমে এসেছে। এভাবে চলতে থাকলে বাজার স্থিতিশীল রাখা কঠিন হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিকভাবে অর্থনীতিতে কোনো সমস্যা হলে সেটির প্রভাবও দেশের অর্থনীতি ও ব্যাংক খাতে পড়ে। বিশেষ করে গত ছয় মাস ধরে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী সম্পর্ক, ব্রেক্সিট ইস্যু প্রভৃতি ব্যাংক খাতে প্রভাব ফেলেছে। এর একটি প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়তে পারে।
রায়হান এম চৌধুরী বলেন, আসলে বাজারের গভীরতা অনেক কম। এত পুরোনো একটি পুঁজিবাজারে যদি এ রকম অবস্থা থাকে। এছাড়া চিটাগং স্টক একচেঞ্জের প্রায় ২৫ বছর হয়ে গেছে। আবার শোনা যাচ্ছে নতুন আরেকটি স্টক এক্সচেঞ্জ হবে। সেটা কোনো বিষয় নয়। বাজারে ভালো মানের কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কিন্তু কোম্পানিগুলো বাজারে আসার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ডিএসই এবং বিএসইসি যে নিয়মনীতি করে রেখেছে তা নমনীয় নয়। বিশেষ করে একটি ভালো কোম্পানি বাজারে আসতে তিন থেকে চার বছর লেগে যাচ্ছে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।