facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

৯০০ কোটি টাকার তহবিল

এক–তৃতীয়াংশ ঋণই পেয়েছেন আইসিবির বিনিয়োগকারীরা


০২ আগস্ট ২০১৭ বুধবার, ০৭:৩১  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


এক–তৃতীয়াংশ ঋণই পেয়েছেন আইসিবির বিনিয়োগকারীরা

 

শেয়ারবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সরকার স্বল্পসুদে যে ঋণ দিয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশই পেয়েছেন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা। ঋণ বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাও আইসিবি।

ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ঋণসহায়তা দিতে সরকার ৯০০ কোটি টাকার তহবিল করলেও শেষ পর্যন্ত ঋণ দেয় ৬৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে আইসিবি ও তার সহযোগী দুই প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীরা ঋণ নেন ২১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ২২ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সম্প্রতি পাঠানো আইসিবির ৩০ জুনভিত্তিক এক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মোট ঋণ গ্রহণকারী ২৫ হাজার ২৬২ জন, আর আইসিবি ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঋণ গ্রহণকারী ১১ হাজার ৫৯০ জন।

‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’ পরিচালনার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট যে নীতিমালা প্রণয়ন করে, তা অনুসরণ করেই এ ঋণ দেয় আইসিবি।

আইসিবির সদ্যবিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার-উজ-জামানের কাছে তহবিলের বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বে নেই বলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

প্রতিবেদন বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ঋণ দিয়ে ৪১ কোটি টাকা মুনাফা করেছে সরকার। ৬৪২ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের থেকে ৯ শতাংশ সুদে আদায় করেছে এযাবৎ ৬৮৩ কোটি টাকা।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট ঋণের মধ্যে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের (প্রথম) ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ৮৪ কোটি ৪৮ লাখ, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের (দ্বিতীয়) ৭৪ কোটি ১৮ লাখ এবং আইসিবির ৫৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। বাকি ৪২৯ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউস মিলিয়ে ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউসগুলো তাদের মোট ২৭ হাজার ৯৯০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর পক্ষে সরকারের কাছে ঋণের আবেদন জানায়। এর মধ্যে ২৬ হাজার ৩৮৪ জন বিনিয়োগকারীর জন্য ৬৮৩ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয় ২৫ হাজার ২৬২ জনকে ৬৪২ কোটি টাকা। ২৩টি মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ১৯ হাজার ২২১ জন ঋণের আবেদন করেন। তাঁদের জন্য ৪৬০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করেও ১৮ হাজার ৩১৬ জনকে আইসিবি দেয় ৪২৮ কোটি টাকা এবং তাঁদের কাছ থেকে আদায় করে ৪৬৩ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ২৫টি ব্রোকার হাউসের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ঋণের জন্য আবেদন পড়ে ৮ হাজার ৭৬০টি। এর মধ্যে ৬ হাজার ৯৪৬ জনকে দেওয়া হয় ২১৪ কোটি টাকা ঋণ। বিপরীতে সরকার আদায় করে ২১৯ কোটি টাকা।

আইসিবিসহ তিন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্র্যাক-ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ২ হাজার ২৮৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী ঋণ পেয়েছেন ৫৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ৭৯৬ জন ঋণ পেয়েছেন ৪০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, ‘৯০০ কোটি টাকার বাকি টাকাও বিতরণ করা সম্ভব হবে আশা করছি। সুদের হার কমানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি সায়েদুর রহমানের পরামর্শ হচ্ছে, বাজারসংশ্লিষ্টদের নিয়ে সরকারের এ তহবিলটিকে নতুন করে সাজানো। সায়েদুর রহমান বলেন, ‘সত্যি সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তা করতে চাইলে ৯০০ কোটি থেকে টাকার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে, সুদের হারও কমাতে হবে।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৯০০ কোটি টাকা থেকে বিতরণ না হওয়া ২৫৮ কোটি টাকা ঋণের কোনো চাহিদা নেই বিনিয়োগকারীদের কাছে। তহবিলের মেয়াদও আছে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সুবিধাও করতে পারবেন না। ঋণের সুদের হার কমানো এবং তহবিলের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে সরকারের কাছে। অর্থ বিভাগ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: