১৯ অক্টোবর ২০১৮ শুক্রবার, ১০:৫৪ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। কিন্তু মূল্যসূচক কমেনি। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রায় ৫৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর ক্ষেত্রে এ হার ৫৫ শতাংশ। অন্য সব খাতে দরপতন হলেও ব্যাংক খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধি সূচকের পতন ঠেকিয়েছে। কারণ ব্যাংকগুলো আইসিবির বন্ডে বিনিয়োগে ছাড় পেয়েছে। এতে এ খাতে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। এদিকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর গতকাল থেকে লেনদেনে ফেরা মুন্নু জুট স্ট্যালার্সের শেয়ার দরে ধস নেমেছে।
বৃহস্পতিবারের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩৩৮ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ১০৩টির বা ৩০ শতাংশের দর বেড়েছে। বিপরীতে ১৮৮টির বা প্রায় ৫৬ শতাংশের দর কমেছে। অপরিবর্তিত ছিল ৪৭টির বা ১৪ শতাংশের দর। তবে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পৌনে ১ পয়েন্ট বেড়ে ৫৩৮১ পয়েন্টে দাঁড়ায়। আর লেনদেন ৩৫ কোটি টাকা কমে ৪৭৬ কোটি টাকায় নেমেছে।
ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ২২টির দর বেড়েছে। কমেছে তিনটির দর। যদিও লেনদেনের শুরুর দিকে সাতটি বাদে বাকি ২৩ ব্যাংকই দর হারিয়ে ছিল। লেনদেন শেষে সর্বাধিক ৮ শতাংশ বেড়ে শাহ্জালাল ব্যাংক ছিল এ খাতে দরবৃদ্ধির শীর্ষে। এ ছাড়া ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক এবং উত্তরা ব্যাংকের শেয়ারদর ৩ থেকে পৌনে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বিপরীতে ট্রাস্ট ব্যাংকের ২ শতাংশ ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১ শতাংশ দর কমেছে।
ডিএসইএক্স সূচকের পরিবর্তন পর্যালোচনায় দেখে গেছে, শুধু ব্যাংক খাত গতকাল এ সূচকে যোগ করেছে অন্তত ২১ পয়েন্ট। শীর্ষে থাকা শাহ্জালাল, সিটি, পূবালী ও উত্তরা ব্যাংক সম্মিলিতভাবে সাড়ে ১১ পয়েন্ট যোগ করেছে।
এদিকে ব্যাংক খাতের মতো ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা খাতে মিশ্র অবস্থা ছিল। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ৯ কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১১টির দর কমেছে। বীমা খাতের ১৬টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২০টির দর। খারাপ অবস্থা ছিল উৎপাদনশীল ও সেবামুখী খাতগুলোতে। ব্যতিক্রম ছিল শুধু পাট খাতের। এ খাতের তিন কোম্পানির সবগুলোর বাজারদর বেড়েছে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের তিন কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৪টির দর কমেছে। প্রকৌশল খাতের চার কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ২৭ কোম্পানির দর। ওষুধ ও রসায়ন খাতেরও ছিল একই দশা। খাতটির ৭ কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ২২টির। বস্ত্র খাতের ১০টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩২টির। এ ছাড়া দরপতন হয়েছে সিমেন্ট, সিরামিক, তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ অন্য সব খাতে।
এদিকে গতকাল বাজারের মৌলভিত্তি বিবেচনায় ওপরের দিকে থাকা অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো স্কয়ার ফার্মা, সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, খুলনা পাওয়ার, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, হেইডেলবার্গ সিমেন্ট, সিঙ্গার বাংলাদেশ, মবিল যমুনা বাংলাদেশ, ম্যারিকো বাংলাদেশ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, ব্র্যাক ব্যাংক ও গ্রামীণফোন।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইতে `এ` ক্যাটাগরিভুক্ত শেয়ারগুলোর মধ্যে ৭৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৫টির। তবে `জেড` ক্যাটাগরিভুক্ত ১৬টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪টির। দরবৃদ্ধির ওপরের দিকেও এসব কোম্পানির প্রাধান্য ছিল। অন্তত পাঁচ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। সেগুলো হলো লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, হামিদ ফেব্রিক্স, প্রাইম টেক্সটাইল, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স এবং শাহ্জালাল ব্যাংক।
এদিকে লেনদেনে ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ায় দু`মাস পর গতকাল মুন্নু স্টাফেলার্সের শেয়ার কেনাবেচা শুরু হয়েছে। কিন্তু লেনদেন শুরুর প্রথম দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
গতকাল প্রায় শেয়ারপ্রতি ২৩২ টাকা কমেছে। কেনাবেচা হয়েছে সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে (৫ শতাংশ কমে) ৪ হাজার ৪০৭ টাকা ৫০ পয়সায়। লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ দরেই শেয়ারটি কেনাবেচা হয়। পুরো সময়ে ক্রেতা শূন্য অবস্থা দেখা গেছে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।