২২ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার, ১১:৫৭ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার বিক্রি করে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলেন না কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠান।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কাছ থেকে শেয়ার বিক্রির অনুমোদন না পাওয়ার কারণে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এদিকে শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে নিজস্ব উৎস থেকে ব্যাংকের কিছু ঋণ শোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা।
জানা যায়, ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের জন্য গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কেয়া কসমেটিকসের তিন কোটি শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠান। সে সময় তার কাছে কোম্পানিটির ৩১ কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৫১০টি শেয়ার ছিল। ঘোষণা দেয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিদ্যমান বাজারদরে পাবলিক মার্কেটে এ শেয়ার বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু একসঙ্গে তিন কোটি শেয়ার বিক্রির চাপে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে—এ বিবেচনায় ডিএসইর পক্ষ থেকে শেয়ার বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়নি।
ডিএসইর একজন কর্মকর্তা বলেন, কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা আসার আগে গত বছরের নভেম্বরে খুলনা পাওয়ার কোম্পানির (কেপিসিএল) করপোরেট উদ্যোক্তা সামিট করপোরেশন লিমিটেড পাবলিক মার্কেটে ১ কোটি ৮০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিল। একসঙ্গে এত বেশিসংখ্যক শেয়ার বিক্রি করা হলে শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বিবেচনায় সে সময় ডিএসইর পর্ষদ শেয়ার বিক্রির বিষয়টি অনুমোদন করেনি। একই কারণে কেয়া কসমেটিকসের উদ্যোক্তার শেয়ার বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়নি। ডিএসইর পরবর্তী পর্ষদ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানান তিনি।
কেয়া কসমেটিকসের একজন কর্মকর্তা জানান, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের জন্য আমরা শেয়ার বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। তবে ডিএসইর পক্ষ শেয়ার বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়নি। তাছাড়া এ বিষয়ে আমাদেরকে স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানোও হয়নি। আমরা বেশ কয়েকবার তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি, কিন্তু তারা জবাব দেয়নি। তবে আমরা জানতে পেরেছি ডিএসইর পরবর্তী পর্ষদ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তারপর হয়তো আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুমোদন না পাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত শেয়ার বিক্রি করে ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। নিজস্ব উৎস থেকে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের কিছু ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কেয়া কসমেটিকসের ঋণের বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. কামাল হোসেন বলেন, সম্প্রতি আমি গাজীপুরে কেয়ার কারখানা পরিদর্শন করেছি। তাদের যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু ভালো অবস্থায় আছে। নতুন করে গ্রুপটিকে আর ঋণ দেয়া হচ্ছে না। তবে এরই মধ্যে তারা কিছু ঋণ পরিশোধ করেছে। তাছাড়া রফতানি আয় থেকেও ঋণের অর্থ সমন্বয় করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ঋণের অর্থ পরিশোধ না করার কারণে কেয়া কসমেটিকসের বিরুদ্ধে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করেছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটির বঙ্গবন্ধু এভিনিউ করপোরেট শাখায় সুদসহ কোম্পানিটির ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকায়। সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউ করপোরেট শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দীন বলেন, খেলাপি ঋণ পরিশোধের জন্য আমরা গত বছর দুবার কেয়া কসমেটিকসের গাজীপুরের জরুনে অবস্থিত কারখানার মালপত্র, ভবন ও যন্ত্রপাতি নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু কোম্পানিটি ঋণ পরিশোধ না করে নিলাম স্থগিতের জন্য উচ্চ আদালতে রিট করে। পরবর্তীতে আইনজীবীর পরামর্শে আমরা কেয়া কসমেটিকসের কাছ থেকে ঋণের অর্থ আদায়ে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করেছি।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।