২১ জুলাই ২০১৮ শনিবার, ০৯:৩৭ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
উৎপাদনে না থাকা পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আরো সাত কোম্পানি যেকোনো সময় বাদ পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। অনেকদিন ধরে এসব কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। গত বুধবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দুটি কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা হঠাৎ আতঙ্কের মধ্যে পড়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, বর্তমান তালিকাভূক্ত সাতটি কোম্পানির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে এবং একটি কোম্পানি আংশিক উৎপাদনে রয়েছে। উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে মডার্ন ডায়িং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিং, রহিমা ফুড করপোরেশন, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রির্জ, মেঘনা কনডেন্সমিল্ক, জুট স্পিনার্স, এমারেল্ড অয়েল, বিচ হ্যাচারি ও দুলামিয়া কটন। অন্যদিকে, আংশিক উৎপাদনে রয়েছে বিডি অটোকারস।
এরমধ্যে মডার্ন ডায়িং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিং ও রহিমা ফুড করপোরেশনকে ডিএসই তালিকাচ্যুত করেছে। এছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে আংশিকভাবে বা পুরোভাবে ইউনাইটেড এয়ার, সিএনএ টেক্সটাইল ও লিগ্যাছি ফুটওয়ার লিমিটেড।
পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুতির বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর। কারণ তাদের সুপারিশেই কোম্পানির আইপিও অনুমোদন করা হয়। তাই বিনিয়োগকারীদের প্রাথমিক নিরাপত্তা তাদেরকেই দিতে হবে। তারা যদি ব্যর্থ হয় তবে আমাদের কাছে আবেদন জানালে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।”
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির অনিয়ম বা অব্যবস্থাপনার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়ভার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর। কেউই এ দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সুতরাং পুঁজিবাজারে শৃংখলা রক্ষার দায়-দায়িত্ব সবার কাঁধেই পড়ে। কিন্তু তালিকাচ্যুতিই কী উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উত্তম পথ হতে পারে?। তালিকাচ্যুত হলে কোম্পানির কী অসুবিধা হবে, ক্ষতির মুখে পড়বেতো হাজার হাজার বিনিয়োগকারী।
তাঁদের মতে, যেকোন কোম্পানির উৎপাদন অপরিহার্য কারণে সাময়িক বন্ধ থাকতেই পারে। কিন্তু উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোকে যথাসময়ে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা কিংবা সেসব কোম্পানির কর্মকান্ডের মনিটরিং করার দায়িত্ব বিএসইসি ও স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর। তারা যদি সঠিক দায়িত্ব পালন করে তাহলে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ এভাবে পদদলিত হবে না।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত রয়েছে বিধায় তাঁরা কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জ তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে তালিকাচ্যুতির যে পথে এগুচ্ছে, তা পুঁজিবাজারের জন্য শুভ নয়।
তাঁরা অভিযোগ করছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জের খামখেয়ালীপনার কারণে বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিনিয়োগকারীদের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে উৎপাদনের বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।