৩১ মে ২০১৯ শুক্রবার, ০৩:৪৯ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ইফাদ অটোস লিমিটেডের রাইট শেয়ারের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার পরিকল্পনা সংশোধনসংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সংশোধিত পরিকল্পনা অনুসারে রাইটের অর্থে গাজীপুর ও ধামরাইয়ে জমি কেনার পাশাপাশি নতুন কেবিন সংযোজন কারখানার কাজে ব্যয় করা হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইর মাধ্যমে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে, বিএসইসি ২২ মে ইফাদ অটোসের পুনর্বিবেচিত রাইট ইস্যু তহবিল বাস্তবায়নের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। রাইট শেয়ার ইস্যুর পুনর্বিবেচিত তহবিল বাস্তবায়নের বিষয়টি গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডাররা অনুমোদন করেছেন। নতুন পরিকল্পনা অনুসারে কোম্পানি ঢাকার ধামরাইয়ে ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকায় ১ হাজার ৫০ ডেসিমেল জমি কিনবে। তাছাড়া গাজীপুরের মাওনায় ৮২০ ডেসিমেল জমি কিনতে ব্যয় ৬ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। নাইফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বিল্ডার্স নামের একটি কোম্পানিকে নতুন সংযোজন কারখানার অবশিষ্ট নির্মাণকাজের জন্য ৪ কোটি টাকা দেয়া হবে। বাকি ৩ কোটি ৭১ লাখ ২৩ হাজার ১৭০ টাকা খরচ হবে ভূমি উন্নয়নে। আর এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাইট অফার ডকুমেন্টসে দেয়া সময়ের চেয়ে আরো এক বছর বেশি সময় লাগবে কোম্পানিটির।
নতুন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইফাদ অটোসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে ধামরাইয়ে বিদ্যমান অ্যাসেম্বলিং প্লান্ট-সংলগ্ন আরো বেশ কিছু জমি কেনা হবে। তাছাড়া গাজীপুরের মাওনায় গাড়ির স্টক ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য জমি কেনা হচ্ছে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের গাড়ি সরবরাহে সুবিধা হবে। এছাড়া আমরা একটি গাড়ির কেবিন অ্যাসেম্বলিং প্লান্ট নির্মাণের কাজ করছি। এতদিন আমরা পুরো কেবিন ভারত থেকে নিয়ে আসতাম। নতুন কারখানা স্থাপনে করা হয়ে গেলে কেবিনের পার্টসগুলো এনে আমাদের প্লান্টে সেগুলো সংযোজন করা হবে। এতে শুল্ক বাবদ প্রায় ২০ শতাংশ ব্যয় সাশ্রয় হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ইফাদ অটোস রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে বাজার থেকে ১২৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সংগৃহীত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ব্যবসা সম্প্রসারণ, চলিত মূলধন ও ঋণ পরিশোধ করবে বলে জানায়। এরপর একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি কোম্পানিটির রাইট শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব অনুমোদন করে।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য ৩২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ইফাদ অটোস। এর মধ্যে ১০ শতাংশ স্টক ও ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। আগেরবারের মতো এবারো উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা নগদ লভ্যাংশ নেবেন না। সমাপ্ত হিসাব বছরে এর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ১ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ২৫ পয়সা। এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ২১ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় ইফাদ অটোস। সে বছর কোম্পানিটির ইপিএস হয় ৬ টাকা ৭৪ পয়সা।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই থেকে মার্চ) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ২১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪ টাকা ৮০ পয়সা। ৩১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ৩৩ পয়সা।
ডিএসইতে গতকাল ইফাদ অটোস শেয়ারের সর্বশেষ দর শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ বা ৭০ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ টাকা ৭০ পয়সায়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৭৩ টাকা ১০ পয়সা ও সর্বোচ্চ দর ১৩৮ টাকা ৯০ পয়সা।
২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইফাদ অটোসের অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। বর্তমানে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২৪৭ কোটি ৯৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। রিজার্ভ ৫১৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬২ দশমিক ৭৭ শতাংশ এর উদ্যোক্তা- পরিচালকদের কাছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ২০ দশমিক ২৯, বিদেশী বিনিয়োগকারী ৪ দশমিক ৪২ ও বাকি ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।