১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সোমবার, ০৯:৩৯ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের প্লেসমেন্ট শেয়ারধারী দুই প্রতিষ্ঠান কোম্পানি থেকে পাওয়া বোনাস শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, প্লেসমেন্টহোল্ডার ইন্ট্রাকো ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুদা আলী সেলিম এবং ইন্ট্রাকো প্রপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াদ আলী দুজনই তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালক। ইন্ট্রাকো ডেভেলপারস বাজারদরে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের ১ লাখ ৪ হাজার ৬৩২টি বোনাস শেয়ার এবং ইন্ট্রাকো প্রপার্টিজ ৪৮ হাজার ৫৭৩টি বোনাস শেয়ার বিক্রি করে দেবে। এদিকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কিনতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলেন, কোম্পানিটি বাজারে তালিকাভুক্তির সময় যে দামে শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল তা ধরে রাখতে পারেনি। আর বোনাস শেয়ার বিক্রির পর এর দাম আরো কমে যাবে। কারণ থিউরিটিক্যাল এডজাস্টমেন্ট হবে। তাই এই শেয়ার কিনলেও সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা অবলম্বন করতে হবে।
এর আগে সম্প্রতি স্টক এক্সচেঞ্জ মারফত বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং কর্তৃপক্ষ জানায়, আবসার অ্যান্ড ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, ইস্ট এন্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড, এম হাই অ্যান্ড কোম্পানি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, গুড সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড ও নেসা অ্যান্ড সন্স লিমিটেড নামের পাঁচটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানির ৯৫ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিক তারা। মূল কোম্পানি ও সাবসিডিয়ারিগুলোর পর্ষদ সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সব সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণের মাধ্যমে সাবসিডিয়ারিগুলোকে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের সঙ্গে একীভূত করা হবে। এতে সাবসিডিয়ারিগুলোর আয়কর ৩৫ থেকে ২৫ শতাংশে নেমে আসবে, কমবে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও। পাশাপাশি সাবসিডিয়ারিগুলো থেকে আসা লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত করও পরিহার করা সম্ভব হবে। একীভূতকরণের কাট অফ ডেট ধরা হয়েছে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পাশাপাশি বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিয়ে উচ্চ আদালতের অনুমোদনক্রমে একীভূতকরণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে তাদের। মাইনরিটি শেয়ারগুলোর একটি যৌক্তিক দাম পরিশোধ করে দেবে তালিকাভুক্ত কোম্পানি।
২০১৮ সালের মার্চে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) চাঁদা নেয় ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন। অভিহিত মূল্যে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলন করে কোম্পানিটি। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থে কোম্পানিটি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বোতলজাতকরণ প্লান্ট ও বিতরণের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করার ঘোষণা দেয় তারা। আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি শেড, জেনারেটর, ট্রাকসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য খাতেও আইপিওর কিছু অর্থ বিনিয়োগ করতে হচ্ছে তাদের। ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড এবং এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনার্স ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। নিরীক্ষক মাফেল হক অ্যান্ড কোম্পানি।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং। সমাপ্ত হিসাব বছরে তাদের সম্মিলিত ইপিএস হয় ১ টাকা ১৫ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ১২ টাকা ৮৪ পয়সা। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৫১ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩৯ পয়সা।
এখন পর্যন্ত ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের মূল ব্যবসা সিএনজি রিফুয়েলিং। ডিএসইতে সর্বশেষ ২৬ টাকা ৭০ পয়সায় ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের শেয়ার হাতবদল হয়। গত বছরের মে মাসে তালিকাভুক্তির পর শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ৬৬ টাকা এবং সর্বনিম্ন নেমেছিল ২৩ টাকা ৯০ পয়সায়।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।