১৬ নভেম্বর ২০২০ সোমবার, ০৬:২৭ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার বিজনেস24.কম
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্বল কোম্পানি হিসেবে পুঁজিবাজারে যুক্ত হতে যাচ্ছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড। কোম্পানিটির আইপিও আবেদন শুরু হবে আগামীকাল ১৭ নভেম্বর। আর চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রবির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিয়েছে।
তথ্য অনুসারে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করবে। কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ইস্যু করবে।
পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থ রবি আজিয়াটার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও আইপিওর ব্যয় নির্বাহে ব্যয় করবে।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরে রবি শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৪ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) রয়েছে ১২ টাকা ৬৪পয়সা। বিগত ৫ টি নিরীক্ষা আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারিত গড় হারে শেয়ার প্রতি লোকসান ১৩ পয়সা।
রবির ইস্যু-ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড।
অন্যদিকে বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বড় মূলধনী হিসেবে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক। এটিকেও অতিক্রম করবে রবি আজিয়াটা। ৪ হাজার ৭১৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের রবির তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বেড়ে ৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা হবে। পরিশোধিত মূলধনে রবি যতটা এগিয়ে, ব্যবসায় ততটাই পিছিয়ে। বিশাল মূলধন নিয়ে ব্যবসা করলেও রবির সর্বশেষ ২০১৯ সালে নিট মুনাফা হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। যা শেয়ারপ্রতি হিসেবে মাত্র ৪ পয়সা। এই পরিস্থিতিতে চাইলেও কোম্পানিটির লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা নেই। কারণ ১ শতাংশ লভ্যাংশ দিতেও ১০ পয়সা ইপিএস প্রয়োজন হয়।
এদিকে দেশের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বড় পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি ন্যাশনাল ব্যাংক। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ভালো মুনাফা এবং ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের আস্থার তলানিতে রয়েছে। যাতে শেয়ারটি অবস্থান করছে অভিহিত মূল্যের নিচে। তবে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ে দুর্বল এবং ২ হাজার কোটি টাকার বেশি পরিশোধিত মূলধন নিয়ে শেয়ারবাজারে আসার অপেক্ষায় রবি আজিয়াটা। লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা না থাকলেও রবির আগমনে বাজারের গভীরতা বাড়বে বলে একটি পক্ষ মনে করছে। তবে কেউ কেউ মনে করছে বাজারের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬৩ কোম্পানির মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৬ কোটি ৪২ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। এই ব্যাংকটির ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি ১.৪১ টাকা করে মোট ৪১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে। এরমধ্য থেকে শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশ্যে ব্যাংকটির পর্ষদ ১০ শতাংশ (৫% নগদ ও ৫% বোনাস) লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
ব্যবসায় এই পরিস্থিতির পরেও ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দর এখন অভিহিত মূল্যের নিচে। রবিবার (১৫ নভেম্বর) লেনদেন শেষে শেয়ারটি ৬.৮০ টাকায় দাড়িঁয়েছে। তাই মূলধন বেশি হলেই যে বাজারের জন্য ভালো তা বলাটা কঠিন।
রবির ১ বছর পরে গঠিত হয়েও গ্রামীণফোন এখন বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে। আর রবি আজিয়াটা এখনো লোকসান থেকে মুনাফা করতে লড়াই করে যাচ্ছে। অথচ গ্রামীণফোনের থেকে রবির কয়েকগুণ বেশি পরিশোধিত মূলধন রয়েছে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।