facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

ইউনিক হোটেলের শেয়ারদর কেন বাড়বে-জানালেন কোম্পানির এমডি নূর আলী


০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ শুক্রবার, ১১:০৯  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


ইউনিক হোটেলের শেয়ারদর কেন বাড়বে-জানালেন কোম্পানির এমডি নূর আলী

২০২১ সালের মধ্যে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের হায়াত সেন্ট্রিক হোটেল অ্যান্ড সার্ভিসড অ্যাপার্টমেন্টও চালু হবে। পাশাপাশি আগামী বছরের মধ্যে নতুন ফাইভ স্টার হোটেল ‘শেরাটন ঢাকা বনানী’ চালু হচ্ছে। একই সময়ের মধ্যে ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রমও শুরু করা যাবে বলে আশাবাদী কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। গতকাল ১৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নূর আলী শেয়ারহোল্ডারদের এসব তথ্য দেন।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমণ-অবকাশ খাতের কোম্পানিটির ১৭তম এজিএম গতকাল রাজধানীর গুলশান ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। পর্ষদ চেয়ারম্যান সেলিনা আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এজিএমে ২০১৭-১৮ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, পরিচালক পুনর্নিয়োগ, স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, নিরীক্ষক পুনর্নিয়োগ, নিরীক্ষকের পারিশ্রমিক, ব্যবসায়িক কার্যক্রমের আগাম অনুমতি ও ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। একই সঙ্গে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনায় বিনিয়োগের এজেন্ডাও অনুমোদন করেছেন তারা।

শেয়ারহোল্ডারদের কোম্পানির ব্যবসায়িক অবস্থা সম্পর্কে অবগত করতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নূর আলী বলেন, “চলতি বছরেই আমাদের দুটি হোটেল প্রকল্প চালু হওয়ার কথা ছিল। মাস পাঁচেক আগে রাজধানীর উত্তরায় ‘হানসা’ নামের প্রিমিয়াম আবাসিক হোটেলটি চালু হয়েছে। আয় ও মুনাফার বিবেচনায় এর সুফল এখনো কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে যোগ হয়নি। তবে আগামী বছর থেকে তা পাওয়া যাবে।”

ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরো বলেন, ‘শেরাটন ঢাকা বনানী’ হোটেল একটি বড় প্রকল্প। এর জমি নেয়া হয়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে। নিয়মকানুনসহ বিভিন্ন জটিলতায় সময়মতো হোটেলটি চালু করা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা এ হোটেলে দেশী-বিদেশী সেবাগ্রহীতাদের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে কমপক্ষে ১৭টি দেশ থেকে যাবতীয় সরঞ্জাম আনতে হয়েছে। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে কাজটি করতেও সময় কিছুটা বেশি লেগেছে। তবে সব কাজ শেষ করে আগামী বছরের মধ্যে হোটেলটি চালু হয়ে যাবে।

চলমান আরেক হোটেল প্রকল্প ‘হায়াত সেন্ট্রিক হোটেল অ্যান্ড সার্ভিসড অ্যাপার্টমেন্ট’-এর কাজ ২০২১ সালের মধ্যে শেষ করে এর কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি। একই সময়ের মধ্যে উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে মেঘনাঘাটের ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির। সোনারগাঁ ইকোনমিক জোন নামের বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রমও ২০২১ সালের মধ্যে চালু করতে চান উদ্যোক্তারা।

বণিক বার্তাকে কোম্পানি সচিব জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল কোম্পানিটির ৩৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা থাকবে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেডের হাতে। অন্যদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৬৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় থাকছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। আর হোটেল প্রকল্পগুলো কোম্পানির একেকটি বিজনেস ইউনিট।

এজিএমে কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ, সেকেন্ডারি বাজারে শেয়ারের দর নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন অনেক শেয়ারহোল্ডার। ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশে সন্তোষ প্রকাশ করলেও শেয়ারের দাম নিয়ে কেউ কেউ হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘শেয়ারের দাম নিয়ে বাজারে অনেক খেলা হয়’ উল্লেখ করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর আলী বলেন, ‘আমরা এ খেলায় বিশ্বাসী নই। শেয়ারের দাম নিয়ে আমরা মাথা ঘামাতে চাই না। আমরা চাই শেয়ারের দাম স্বাভাবিক গতিপথে থাকুক।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির বর্তমান শেয়ারদর সম্পদমূল্যেরও নিচে রয়েছে। আগামীতে প্রকল্পগুলোর আয় যোগ হবে। কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট খুবই দক্ষ।’ এ শেয়ারের দাম আগামীতে সম্পদমূল্যের নিচে থাকবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

শেয়ারহোল্ডারদের হতাশার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক গোলাম মুস্তাফা বলেন, দেশের অনেক কোম্পানির একাধিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থাকে। কিন্তু ইউনিক হোটেলের রিপোর্ট একটিই এবং তা খুবই স্বচ্ছ।

আগামীতে আরো বেশি লভ্যাংশ দেয়ার আশা প্রকাশ করে সব এজেন্ডা অনুমোদনের পর সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন পর্ষদ চেয়ারম্যান সেলিনা আলী। সভায় অন্যদের মধ্যে পরিচালক নাবিলা আলী, মো. খালেদ নূর, মোহাম্মদ মহসীন, গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন, চৌধুরী নাফিজ সারাফাত, স্বতন্ত্র পরিচালক রোটারিয়ান গোলাম মুস্তাফা, কোম্পানি সচিব মো. শরীফ হাসান এসিএস, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জনি কুমার গুপ্ত এফসিএ, গ্রুপ সিএফও মো. গোলাম সরোয়ার এফসিএ ও কোম্পানির অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

গেল হিসাব বছরে ইউনিক হোটেলের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ১ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ১ টাকা ৮০ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৮৮ টাকা ৮২ পয়সা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সর্বশেষ ৫৩ টাকা ৮০ পয়সায় ইউনিক হোটেলের শেয়ার হাতবদল হয়।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

শেয়ারবাজার -এর সর্বশেষ