facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ ভাগ্য অন্যের হাতে


০৬ অক্টোবর ২০১৭ শুক্রবার, ০২:৪০  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ ভাগ্য অন্যের হাতে

বাঁচা মরার ম্যাচ? না এমন উপমাও হয়তো কম হয়ে যায়। আজ বোমবোনেরায় আর্জেন্টিনা-পেরু ম্যাচটা তো এর চেয়েও বেশি কিছু ছিল। জয় পেলেই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বের হাতছানি। হারলেই বাদ পড়ে যাওয়ার শঙ্কা। এমন ম্যাচে খেলার চেয়ে ধুলাই ওড়ে বেশি। স্নায়ুচাপে ভোগে দুই দল। আর সেটা সবচেয়ে ভালো সামাল দিতে পারে যারা, জয় হয় তাদের। আজ অন্তত সে যুদ্ধে একটু হলেও এগিয়ে ছিল পেরু। আর্জেন্টিনার মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছে তারা। বিশ্বকাপে যাওয়ার জন্য এখন অন্যদের দিকেই চেয়ে থাকতে হবে আর্জেন্টিনাকে।

অথচ ম্যাচের শুরু থেকেই গোছানো ফুটবল খেলছিল আর্জেন্টিনা। ছোট ছোট পাসে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সদলবলে আক্রমণে উঠে যাওয়া। দ্রুততালের পাসে খেলার গতি একটুও না কমিয়ে আক্রমণে ওঠার এ ছন্দটাই পাওয়া যাচ্ছিল না গত কিছুদিনের আর্জেন্টিনার ম্যাচে। ৫ মিনিটেই এর ফল পেয়ে যাচ্ছিল স্বাগতিক দল। গ্যাব্রিয়েল মারকাদোর ক্রস থেকে হেড করেছিলেন ঘরের ছেলে (বোকা জুনিয়র্স স্ট্রাইকার) দারিও বেনোদেতো। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট সে শট।

এরপরই ম্যাচে শুরু হলো ‘মেসি শো’। মূল স্ট্রাইকার বেনোদেতোর একটু পেছনে লিওনেল মেসিকে জায়গা করে দিয়েছিলেন হোর্হে সাম্পাওলি। জায়গা পেয়ে প্রায় একাই পেরুকে তটস্থ করে রাখছিলেন মেসি।


১৫ মিনিটের মধ্যেই পেরু রক্ষণকে বেশ কবার বোকা বানিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। কিন্তু কখনো তাঁর শট ব্লক হচ্ছিল, কখনো বা বারের বাইরে দিয়ে যাচ্ছিল মেসির শট।

পাল্টা আক্রমণে উঠে পেরুও ভয় দেখাচ্ছিল বেশ। ম্যাচে গোলের প্রথম ভালো সুযোগটাও পেরু পেয়েছিল। অন্যপ্রান্তে অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, বেনোদেতো কিংবা গোমেজরাও কম চেষ্টা করছিলেন না। কিন্তু গোলের সবচেয়ে ভালো সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন ওই মেসি। কর্নার থেকে বল পেয়ে নেওয়া মেসির শট ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বেরিয়ে যায়। ৩৯ মিনিটে তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নেওয়া আরেকটি শট একটুর জন্য বাঁ পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। যোগ করা সময়ে মেসির ক্রস খুঁজে পায় বেনোদেতোকে। কিন্তু বলে মাথা লাগাতে পারলেও সহজ সে সুযোগকে গোলে রূপান্তর করতে পারেননি এই স্ট্রাইকার।

দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত আর্জেন্টিনা। মেসির পাস থেকে করা বেনোদেতোর শট ঠেকিয়ে দেন পেরু গোলরক্ষক পেদ্রো গালেসে। ফিরতি বলে নেওয়া মেসির শটে পোস্টে লেগে ফিরে আসে। পরের মিনিটেই লুকাস বিলিয়ার নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়ে দেন গায়েসে। ৫৮ মিনিটে মেসির দুর্দান্ত এক থ্রু পাস থেকে আর্জেন্টিনাকে প্রায় এগিয়ে দিয়েছিলেন আলেহান্দ্রো গোমেজ । কিন্তু গালেসের আরেকটি সেভ তা হতে দেয়নি।

এর পর শুধু এর পুনরাবৃত্তিই হয়েছে। বাঁ পায়ের ছন্দে মেসি মুগ্ধ করেছেন, একের পর এক সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু গোল আর পাননি। গোলমুখে গেলেই কেন যেন আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ দম হারিয়ে ফেলে। ১৭ ম্যাচে মাত্র ১৬ গোল করা তো এরই প্রমাণ। এত দিন মেসির সঙ্গে গঞ্জালো হিগুয়েইন কিংবা সার্জিও আগুয়েরোকে ব্যর্থ হতে দেখা গেছে। আজ দেখা গেল বেনোদেতোকেও। ৬০ মিনিটে মাঠে নেমে মিডফিল্ডার গাগোর চোট পেয়ে ৬৬ মিনিটে মাঠ ছাড়া নিশ্চিত করেছে মাঠে নামা হচ্ছে না পাওলো দিবালারও।

শেষ মুহূর্তে দুটো ফ্রি কিক পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি মেসি। উল্টো ৯৫ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে পেরুকে জয় এনে দিচ্ছিলেন স্ট্রাইকার গুরেরো। রোমেরোর দুর্দান্ত সেভ হারের মুখ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনাকে। বাঁচিয়ে রেখেছেন আর্জেন্টিনার নিভু নিভু আশাও।

নিজেদের আড়াল করতে আজ ভাগ্যকেও দুষতে পারে আর্জেন্টিনা। এতবার গোলের কাছে গিয়েও গোল না পাওয়া, মেসির শট পোস্টে লেগে ফেরা, পেরু গোলরক্ষকের নিজের সেরাটা আজকেই দিয়ে দেওয়া। জয় থেকে মাত্র কয়েক ইঞ্চি দূরেই তো ছিল আর্জেন্টিনা! যেটি এখন মেরু-সাগরের ব্যবধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১০ বিশ্বকাপে ঘোর বর্ষণের মধ্যে বুড়ো পালেরমোর গোল আর্জেন্টিনাকে অবিশ্বাস্যভাবে নিয়ে গিয়েছিল চূড়ান্ত পর্বে। এবার কী নাটক জমিয়ে রাখা আছে কে জানে।মেসিকে ছাড়াই কি তাহলে দেখতে হবে ২০১৮ বিশ্বকাপ!

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: