facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে বাজারে যে গুজব


২৮ নভেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার, ০১:৫২  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে বাজারে যে গুজব

ক্রমাগত লোকসানে থাকা জেড ক্যাটাগরির আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ারের দর গত এক মাসে প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই রকম অবস্থায় থাকা কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম সাধারণত বৃদ্ধি পায় না। তবে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য বা গুজব থাকলে চাহিদা বাড়ে, সেই সঙ্গে দাম বাড়ে।

গত এক মাসে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩ টাকা। এক মাস আগে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ৫ টাকা ১০ পয়সা। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম গতকালের চেয়ে বৃদ্ধি পায় প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ (৭০ পয়সা)। লেনদেন শেষে দাম হয়েছে ৮ টাকা ১০ পয়সা।

সম্প্রতি কোনো কারণ ছাড়াই শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জানিয়েছে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে এ কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকার বিষয়টি ডিএসইর নজরে আসে। অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে কোম্পানিটিকে নোটিশ দেয় ডিএসই। নোটিশের জবাবে কোম্পানিটি ডিএসইকে জানিয়েছে, কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই তাদের শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ হেলাল বলেন, মৌলভিত্তির কারণে এই শেয়ারের দাম বাড়তে পারে না। কোম্পানির কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য থাকতে পারে। তবে খোলাখুলিভাবে যেহেতু তা বলা হচ্ছে না। তাই একটা কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে কোনো গুজবের কারণেই এই কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা বেড়েছে। আর চাহিদা বাড়ানোর কারণে দাম বাড়ছে। গুজব কি না, তা সময়ই বলে দেবে।

প্রায় এক দশক ধরে লোকসানে রয়েছে কোম্পানিটি। ডিএসইর ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সাল শেষে কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ ছিল ১৪ কোটি টাকা। গত বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪০ পয়সা। অর্ধবার্ষিকে (জানুয়ারি-জুন) শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ২৭ পয়সা। গত তিন বছর ধরে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। কোনো কোম্পানি যদি বছর শেষে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে না পারে, তাহলে কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হয়।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ১৯৮৭ সালের ২০ মে আল-বারাকা ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড নামে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৪ সালে মালিকানা পরিবর্তন হওয়ার পর ওরিয়েন্টাল ব্যাংক লিমিটেড নামে কার্যক্রম চালায় ব্যাংকটি। মালিকানা হস্তান্তরের পর পরই ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে শুরু হয় নজিরবিহীন লুটপাট। বাংলাদেশ ব্যাংক পরে এতে প্রশাসক বসায়। কিন্তু তারল্য সংকটের কারণে ওই সময় ব্যাংকটি থেকে টাকা তুলতে পারছিলেন না আমানতকারীরা। সরকার এরপর আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে ২০০৭ সালে একটি স্কিম চালু করে। পরবর্তী সময়ে ব্যাংকটির বেশির ভাগ শেয়ার বিক্রির জন্য নিলাম ডাকা হলে তা কিনে নেয় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আইসিবি ফিন্যান্সিয়াল গ্রুপ এজি। এরপর ২০০৮ সালে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের সব সম্পত্তি ও দায় নিয়ে নতুন নামে যাত্রা শুরু করে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক।

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: