facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

আইপিও তহবিলের ৪ শতাংশও ব্যয় করেনি রিজেন্ট


১৫ জুন ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ০৫:৩২  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


আইপিও তহবিলের ৪ শতাংশও ব্যয় করেনি রিজেন্ট

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয় করতে না পারায় গত বছরের নভেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) বিনিয়োগকারীদের অনুমোদনক্রমে অর্থ ব্যয়ের সময়সীমা বাড়িয়েছিল রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। তবে সময়সীমা বাড়ানোর পরে কারখানার সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন (বিএমআরই) এবং নতুন তৈরি পোশাক ইউনিট স্থাপনের কাজে গতি আসেনি। আইপিওর অর্থ হাতে পাওয়ার ১৮ মাসে তহবিলের মাত্র ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে কোম্পানিটি। পরিবর্তীত সময়সীমা অনুযায়ী আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে কোম্পানিটিকে বাকি ৯৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বা ১২০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে।

কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমনটি হলে আবারো সময়সীমা বাড়াতে হবে তাদের।

জানা যায়, কারখানার সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন (বিএমআরই) এবং নতুন তৈরি পোশাক প্রকল্পে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের শেষার্ধে পুঁজিবাজার থেকে ১২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামভিত্তিক হাবিব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর আইপিওর অর্থ ব্যবহারের অনুমতি পায় কোম্পানিটি। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, বিএমআরই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ৮২ কোটি ৪৬ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০ টাকা আইপিও তহবিল ব্যবহারের অনুমতি পাওয়ার ১২ মাসের মধ্যে অর্থাত্ ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যেই ব্যয় করার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। আর নতুন তৈরি পোশাক প্রকল্পে ৩৯ কোটি ৮৫ লাখ ৩ হাজার ৯৬২ টাকা ১৮ মাসের মধ্যে অর্থাত্ ২০১৭ সালের ১৯ জুনের মধ্যে ব্যয় করার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে। এর বাইরে আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ হিসেবে ২ কোটি ৬৮ লাখ ১৬ হাজার ৫১৮ টাকা ব্যয় করার কথা।

তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় আইপিওর অর্থ ব্যয়ের সময়সীমা বাড়াতে ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এজিএমে বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নেয় কোম্পানিটি। সংশোধিত সময়সীমা অনুসারে বিএমআরই প্রকল্পে অর্থ ব্যয়ের সময়সীমা ১০ মাস বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। আর নতুন তৈরি পোশাক প্রকল্পে অর্থ ব্যয়ের সময়সীমা চার মাস বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়। এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থারও অনুমোদন নেয় তারা।

এদিকে রিজেন্ট টেক্সটাইলের নিরীক্ষক খান ওয়াহাব শফিক রহমান অ্যান্ড কোং কর্তৃক বিএসইসি ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে দাখিল করা আইপিওর অর্থ ব্যয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত বিএমআরই প্রকল্পে মোট বরাদ্দের মাত্র শূন্য দশমিক ৬৫ শতাংশ বা ৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পেরেছে কোম্পানিটি। আর নতুন তৈরি পোশাক প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ অর্থ।

তবে আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ খাতে কোম্পানিটি চলতি বছরের মে পর্যন্ত ৯৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বা ২ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার ৯৬৬ টাকা ব্যয় করেছে।
সংশোধিত সময়সীমা অনুসারে চলতি বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বিএমআরই প্রকল্পের ৯৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং তৈরি পোশাক প্রকল্পের ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হবে রিজেন্ট টেক্সটাইলকে। এদিকে নিরীক্ষক বলছেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত চার মাসে এক টাকাও ব্যয় করেনি রিজেন্ট টেক্সটাইল।

আইপিও তহবিলের সিংহভাগ অর্থ অব্যবহূত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে রিজেন্ট টেক্সটাইলের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা অঞ্জন কে ভট্টাচার্য বলেন, আমরা অন্যান্য কোম্পানির মতো ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের জন্য আইপিওতে আসিনি। কারখানার সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন এবং নতুন তৈরি পোশাক ইউনিট স্থাপনের জন্য আইপিওর অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে। এ বছরের অক্টোবরের মধ্যে বিএমআরই প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে সংযোজিত যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়ে গেলে এগুলো স্থাপনে খুব বেশি সময় লাগবে না। তাই আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিএমআরই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে তৈরি পোশাক প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে এক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করতে হবে।

এদিকে আইপিওর অব্যবহূত অর্থের সুদ আয়ের প্রভাবে কোম্পানিটির আয় বেড়ে গেছে। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত ১২৫ কোটি টাকার মধ্যে ১২০ কোটি টাকাই ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসাবে রাখা আছে। এফডিআরে থাকা এ অর্থের বিপরীতে চলতি হিসাব বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রথম নয় মাসে ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা সুদ আয় হয়েছে কোম্পানিটির। হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে পণ্য বিক্রি ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ কমলেও এ সময়ে নিট মুনাফায় ২৭ দশমিক ৮১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে রিজেন্ট টেক্সটাইল।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: