facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

আইপিও আইন সংশোধনের প্রস্তাব


১৭ জুন ২০১৯ সোমবার, ০৩:০৬  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


আইপিও আইন সংশোধনের প্রস্তাব

ক্যাপিটাল ইস্যু রুলস তথা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আইনের সংশোধনী এবং প্লেসমেন্ট শেয়ারে লক-ইনের মেয়াদ সংক্রান্ত স্টেকহোল্ডারদের প্রস্তাব পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জমা দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) তৈরি করা যৌথ প্রস্তাবনা বিএসইসিতে জমা দেওয়া হয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সকালে আলোচিত চার সংগঠনের নেতারা বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের প্রস্তাবনাটি তুলে দেন। বেলা ১২টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত প্রস্তাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা চলছিল। আলোচনায় ক্যাপিটাল ইস্যু রুলস, ২০১৫ এর সংশোধনীর পাশাপাশ বাজার পরস্থিতি এবং সম্প্রতি ঘোষিত জাতীয় বাজেটের বিভিন্ন প্রস্তাবনা, বিশেষ করে বোনাস ও রিজার্ভের উপর কর আরোপের বিষয়টি স্থান পেতে পারে।

গত মে মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ এর সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। স্টেকহোল্ডারদের মতামতের জন্য চলতি চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ আইনের সংশোধনীর খসড়া প্রকাশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ১০ জুন আলোচিত চার সংগঠন বৈঠকের মাধ্যমে তাদের পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব চূড়ান্ত করে। ওই বৈঠকেই ১৭ জুন বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাত করে তার কাছে প্রস্তাবসমূহ ও মতামত কাছে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত পাবলিক ইস্যু রুলসের খসড়া অনুসারে, ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতি (শেয়ারের অভিহিত মূল্যের আইপিও) আইপিওর আকার হতে হবে ন্যূনতম ৫০ কোটি টাকা কিংবা ইস্যুয়ার কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ, যেটি বেশি হয়। একইভাবে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আকার হতে হবে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা কিংবা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ, যেটি বেশি হয়।

আলোচিত চার স্টেকহোল্ডার প্রস্তাব অনুসারে আইপিওর ন্যূনতম আকার হবে ৩০ কোটি টাকা অথবা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ-এই দুয়ের মধ্যে যেটি বেশি সেটি। তবে এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বিনিয়োগের পরিমাণ হবে কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা। একইভাবে বুক বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক অফারের পরিমাণ হবে ৫০ কোটি টাকা কিংবা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ, যেটি বেশি হয়। আর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা।

প্লেসমেন্ট শেয়ারের (আইপিওর আগে মূলধন বাড়ানোর জন্য বিক্রি করা শেয়ার) আকার বেঁধে দেওয়ারও প্রস্তাব করছে চার সংগঠন। তাদের প্রস্তাব অনুসারে ফিক্সড প্রাইস ও বুক বিল্ডিং—উভয় পদ্ধতির ক্ষেত্রে প্রি-আইপিও প্লেসমেন্টের আকার কোনোভাবেই এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ইকুইটির ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।

তবে অন্যান্য বিষয়ে সংগঠন চারটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও প্লেসমেন্ট শেয়ারের লক-ইনের বিষয়ে তারা একমত হতে পারেনি। তিনটি সংগঠন বিএসইসির দেওয়া ৩ বছরের লক-ইনের প্রস্তাব সমর্থন করলেও ভিন্ন মত দিয়েছে বিএমবিএ।
বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রসপেক্টাসে উল্লেখকৃত কোম্পানির সব শেয়ারহোল্ডারের শেয়ারের ওপর তিন বছরের লক ইন প্রযোজ্য হবে। আর লক ইনের মেয়াদ শুরু হবে স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের প্রথম দিন থেকে। বিএমবিএর প্রস্তাব অনুসারে লক ইনের মেয়াদ হবে লেনদেন শুরুর তারিখ থেকে দুই বছর কিংবা দুটি এজিএম অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত।

আইপিওর ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের (ইআই) কোটার বিষয়ে বিএসইসির সিদ্ধান্ত হচ্ছে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে অভিহিত মূল্যে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে ইআইদের বিদ্যমান কোটা ৪০ থেকে কমে ৩০ শতাংশ হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের (এনআরবি ব্যতীত) কোটা ৪০ থেকে বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়াবে। অন্যদিকে বুক বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ইআইদের বিদ্যমান কোটা ৬০ থেকে কমে ৫০ শতাংশ হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিদ্যমান কোটা ৩০ থেকে বেড়ে ৪০ শতাংশে দাঁড়াবে। তবে স্টেকহোল্ডারদের প্রস্তাব হচ্ছে ফিক্সড প্রাইসের ক্ষেত্রে ইআইদের কোটা ৩০ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৬০, মিউচুয়াল ফান্ড ৫ ও এনআরবি ৫ শতাংশ। আর বুক বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ইআই ও মিউচুয়াল ফান্ডের কোটা ৫০, এনআরবি ৫ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৪৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের প্রস্তাব দেয়া হবে।
স্টেকহোল্ডারদের প্রস্তাব অনুসারে, ইআই হিসেবে প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ফান্ড কিংবা গ্র্যাচুইটি ফান্ডের মতো যেকোনো রিটায়ারমেন্ট ফান্ডের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ হবে ন্যূনতম তিন বছর। আইপিওতে ইআই কোটার সুবিধা পেতে হলে পুঁজিবাজারে রিটায়ারমেন্ট ফান্ডের মোট তহবিলের ন্যূনতম ৫ শতাংশ বিনিয়োগ থাকতে হবে।

এছাড়া আইপিওর আগে উত্তোলিত মূলধনের ব্যবহারের বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত ছিল আইপিও আবেদনের আগেই পুরো অর্থ ব্যয় করতে হবে। তবে এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের প্রস্তাব হচ্ছে আইপিও আবেদনের আগে ৫০ শতাংশ এবং আইপিও সাবস্ক্রিপশনের আগে বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ ব্যবহার করতে হবে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: