০৬ মে ২০২০ বুধবার, ১০:২৯ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলার অংশ হিসেবে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার সাধারণ ছুটি বাড়ানোর পর বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসইর জনসংযোগ ও প্রকাশন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান জানান, দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ট্রেডিং, সেটেলমেন্ট কার্যক্রমসহ সকল দাফতরিক কাজ ১৬ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে৷
তিনি জানান, ১০ মে থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করার জন্য বিএসইসির কাছে সম্মতি চাওয়া হয়েছে। যদি বিএসইসি অনুমতি দেয়, তাহলে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করা হবে।
এর আগে প্রথমে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ারবাজারের লেনদেন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর সরকার সাধারণ ছুটি বাড়ালে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারপর তা বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল করা হয়। তারপর তা চতুর্থ দফায় বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। এরপর পঞ্চম দফায় তা বাড়িয়ে ৫ মে করা হয়।
এ পরিস্থিতিতেও সীমিত পরিসতে পুঁজিবাজারের লেনদেন চালু করতে চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বেশ কিছু শর্ত সাপেক্ষ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তবে বিএসইসিতে তিনটি কমিশনার পদ ফাঁকা থাকায় কোরাম সংকটের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
এদিকে পুঁজিবাজারকে অপরিহার্য সেবার (অ্যাসেনশিয়াল সার্ভিস) আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষমতা বিএসইসির হাতে নেই। সেটা কেবল প্রধানমন্ত্রীই অনুমতি দিতে পারেন। ফলে সার্বিক দিক বেচনায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের আগে ডিএসই’র লেনদেন চালু করা দাবিটিও ঝুলে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক বলেন, ডিএসই’র আবেদনকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে বিএসইসি। তবে কিছু বিষয়ে অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার বিএসইসি’র হাতে নেই। এ বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ করছেন।
জানা গেছে, ডিএসই লেনদেন চালু করতে বিভিন্ন বিষয় থেকে অব্যাহতি চেয়েছে, যা কমিশন সভার মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে বিএসইসি কমিশনারদের কোরাম সংকটে থাকায় কমিশন সভা করা সম্ভব হবে না। যাতে স্বাভাবিকভাবেই ডিএসইর চাহিদার বিভিন্ন বিষয়ে অব্যাহতি দেওয়া সম্ভব হবে না।
বিএসইসি ৪ কমিশনার ও ১জন চেয়ারম্যান নিয়ে গঠিত। এ ৫ জনের মধ্যে বর্তমানে কমিশনে রয়েছেন একজন চেয়ারম্যান ও একজন কমিশনার। কিন্তু কোরাম পূর্ণ করতে লাগে ৩ জন। ফলে কমিশন সভা অসম্ভব।
এছাড়া কমিশনের পাশাপাশি ডিএসইরও লেনদেন চালুর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত লেনদেন চালুর বিষয়ে ট্রেকহোল্ডারদের মতামত নেয়নি। যারা মূলত লেনদেন কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। তবে কমিশনের সম্মতি পেলে তা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ডিএসই। কিন্তু সেখানেও সম্মতির ক্ষেত্রে কোরাম সংকট হলে লেনদেন চালু করা সম্ভব হবে না।
৩ মে দুপুরে ১০ মে লেনদেন চালুর সম্মতি চেয়ে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বরাবর চিঠি দিয়েছেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হক। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল লেনদেন চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।