facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

বিবি’র সুদহার কমানোর সুপারিশ


২৪ নভেম্বর ২০১৬ বৃহস্পতিবার, ০৮:৩২  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


বিবি’র সুদহার কমানোর সুপারিশ

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) দেওয়া ঋণের সুদহার ১ শতাংশ কমিয়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে এক গবেষণা প্রতিবেদনে। গবেষণাটি বাংলাদেশ ব্যাংকেরই।

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে সুদহার কমানোর এ সুপারিশ করা হয়। প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক বায়েজীদ সরকার ও শামিম মন্ডল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০০৩ সালের ৮ নভেম্বর সর্বশেষ ব্যাংক রেট ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। এরপর দীর্ঘ ১৩ বছর এই হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দিষ্ট সুদহারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়ে থাকে। এই সুদহার ‘ব্যাংক রেট’ বা নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিত। অর্থ ব্যবস্থাপনায় এই ‘ব্যাংক রেট’কে সুদহারের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ব্যাংকগুলো বিভিন্ন অগ্রাধিকারমূলক খাতে পুনঃ অর্থায়ন সুবিধার আওতায় এই ঋণ ব্যবহার করে।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানো হয়। এতে রেপো তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নেওয়া ধারের বিপরীতে সুদহার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া রিভার্স রেপো তথা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তার উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে রাখলে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ পায়। রেপো বা রিভার্স রেপোর মাধ্যমে সাধারণত এক দিনের জন্য ধার করা বা জমা রাখা হয়।

বর্তমান বাজারে ঋণের সুদহার নিম্নগামী থাকায় ব্যাংক রেট ৫ শতাংশ থেকে ১ পয়েন্ট কমিয়ে ৪ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা প্রতিবেদনে। এ ছাড়া ব্যাংক রেটের হার কমানোর পর রেপো ও রিভার্স রেপোর সুদহারও আবার কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। সুদহার কমলে বিনিয়োগ বাড়তে পারে বলে মত দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

জানা গেছে, ব্যাংক খাতে গত আগস্ট মসের শেষে মোট তারল্যের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নগদ তারল্যের চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, উদ্বৃত্ত তারল্য বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা। উদ্বৃত্ত তারল্যের বড় অংশই অবশ্য সরকারি বন্ড ও বিলে বিনিয়োগ করা আছে।

ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, দেশে ঋণের উচ্চ সুদহার থাকায় বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন করা কঠিন। সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা সম্ভব হলে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে টিকে থাকা সম্ভব। দীর্ঘদিন ধরে এমন দাবি করে আসছেন ব্যবসায়ীরা।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বেঁধে না দিলেও ব্যাংক-ব্যবস্থায় ঋণের উচ্চ সুদহার কমানোর প্রচেষ্টা রয়েছে। এ জন্য ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান সর্বোচ্চ ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। এভাবে নিয়মিত ভিত্তিতে সুদহার তদারক করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরি সম্প্রতি বলেন, ব্যাংক রেট কমিয়ে দিলেই যে সুদহার কমে যাবে, তা বলা যাবে না। আবার সুদহার কমলেই বিনিয়োগ চাঙা হবে, তারও গ্যারান্টি নেই। তাই ব্যাংক রেট হঠাৎ করেই কমানো ঠিক হবে না। এটা কমানোর আগে নানা ধরনের গবেষণা প্রয়োজন।

মোস্তফা কে মুজেরি আরও বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সুদহার এভাবে সহজেই কমবে না। এত উদ্বৃত্ত তারল্য, তাতে তো সুদহার অনেক কমার কথা ছিল, কিন্তু কমছে না। তাই এসব হিসাবকে সরলীকরণ করা ঠিক হবে না। ব্যাংক রেট কমিয়ে দিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফা কমে যাবে। দেশের যদি উপকার না আসে, তাহলে ক্ষতি হয়ে যাবে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: